করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে শঙ্কা দিন দিন গভীর হচ্ছে। গত বছরের ৮ মার্চে আক্রান্ত ও ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবরের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনায় ১০ হাজার ৮১ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনা। এই মৃত্যুর মিছিলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সেনা সদস্য, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী ও সাংবাদিক রয়েছেন।
 
 
দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৩৯ জন চিকিৎসক ও ৩৪ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।
 
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএর) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে ২ হাজার ৯১০ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর ১ হাজার ৯৯৮ নার্স এবং ৩ হাজার ২৯৫ স্বাস্থ্যকর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন এই সময়ের মধ্যে।
 
গত বছরের ১৫ এপ্রিল করোনায় দেশে প্রথম একজন চিকিৎসক মারা যান। তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দীন আহমদ (৪৭)। তার মৃত্যুর খবর চিকিৎসক সমাজসহ সব শ্রেণিপেশা ও সাধারণ মানুষের হৃদয় নাড়া দেয়, নেমে আসে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয় এই ‘মানবিক ও গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত এই চিকিৎসকের মৃত্যুতে। এরপর থেকে করোনায় চিকিৎসকদের মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হতে থাকে।
 
বিএমএর তথ্য বলছে, গত বছরের জুন মাসে মোট ৪৫ জন চিকিৎসক করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ওই মাসের ৪ তারিখ সবচেয়ে বেশি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন পাঁচজন চিকিৎসক মৃত্যুবরণ করেছিলেন। যা ছিল সর্বোচ্চসংখ্যক চিকিৎসকের এক দিনে মৃত্যু।
 
বিএমএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩ চিকিৎসক মারা গেছেন করোনায়। ফেব্রুয়ারিতে ১ জন, মার্চে ৩ জন এবং এপ্রিলে ৮ জন চিকিৎসক প্রাণ হারান।
 
এদিকে সাংবাদিকদের ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ ‘আমাদের গণমাধ্যম, আমাদের অধিকার’-এর তথ্য অনুযায়ী, করোনায় দেশে এ পর্যন্ত ৩৪ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও ১৪ জন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন। এই মৃত্যুর তালিকায় রয়েছেন খ্যাতিমান সাংবাদিক কামাল লোহানী, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানসহ অনেকে।